শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০২:১১ পূর্বাহ্ন
বরগুনা প্রতিনিধি:
গর্ভের সন্তান নষ্ট করতে রাজি না হওয়ায় সৎ মা আকলিমা বেগমকে (৩০) বেধড়ক মারধর করছে সৎ ছেলে শাহীন মোল্লা।আহত অন্তঃস্বত্তা গৃহবধুকে (সৎ মা) বুধবার রাতে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।ঘটনা ঘটেছে বরগুনার আমতলী পৌর শহরের সবুজবাগ এলাকায় মঙ্গলবার রাতে।জানা গেছে,২০১০ সালে বরগুনা জেলার বেতাগী উপজেলার গেরদো লক্ষিপুরা গ্রামের কামরুজ্জামান মোল্লা আমতলী পৌর শহরের মিঠাবাজার এলাকার মেসের মল্লিকের মেয়ে আকলিমাকে দ্বিতীয় বিয়ে করে।
বিয়ের সময় হতদরিদ্র আকলিমার বাবা জামাতাকে ফুচকা ব্যবসার জন্য ২০ হাজার টাকা যৌতুক দেয়।বিয়ের ৮ বছরে আকলিমা তিন বার সন্তান ধারন করে।প্রতিবারই সন্তান ধারন করলে কৌশলে স্বামী কামরুজ্জামান ও সৎ ছেলে শাহীন মোল্লা শারীরিক ও মানষিক নির্যাতন করে গর্ভের বাচ্চা নষ্ট করে দেয়।ইতিপূর্বে দু’বার নষ্ট করেছে। বর্তমানে আকলিমা বেগম চার মাসের অন্তঃস্বত্তা। সৎ মায়ের অন্তঃস্বত্তার খবর পেয়ে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১ টার সময় সৎ ছেলে শাহীন মোল্লা এবং স্বামী কামরুজ্জামান মোল্লা বাড়ীতে আসে।স্বামী কামরুজ্জামান পেটের সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ প্রয়োগ করে।এতে রাজি হয়নি আকলিমা।
পরে ক্ষিপ্ত হয়ে সৎ ছেলে শাহীন মোল্লা সৎমাকে বেধড়ক মারধর করে।মারধরে আকলিমা জ্ঞান হারিয়ে ফেলে।মারধর শেষে আকলিমাকে ঘরের মধ্যে আটকে রাখে।খবর পেয়ে বুধবার রাতে আকলিমার স্বজনরা তাকে উদ্ধার করে আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করে।বৃহস্পতিবার আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা গেছে,আকলিমার বাম চোখের নিচে রক্তাক্ত জখম।শরীরের যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছেন।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার নিখিল চন্দ্র বলেন,আকলিমা চার মাসের অন্তঃস্বত্তা।তার বাম চোখের নিচে এবং শরীরে বিভিন্ন স্থান রক্তাক্ত ফোলা জখমের চিহৃ রয়েছে।আহত আকলিমা জানান,বিয়ের আট বছরে তিন বার সন্তান ধারন করেছি।যখনই সন্তান ধারনের খবর জানতে পায় তখনই স্বামী ও সৎ ছেলে মিলে কৌশলে আমার গর্ভের সন্তানকে নষ্ট করে দেয়।নষ্ট করতে রাজি না হলে শারীরিক নির্যাতন করে।নির্যাতন সহ্য করতে না পেরে সন্তান নষ্ট করে ফেলি।
এখন আবার আমার পেটের সন্তানকে নষ্ট করার জন্য চাপ দেয়।আমি রাজি না হওয়াকে আমাকে সৎ ছেলে শাহীন ও স্বামী কামরুজ্জামান মারধর করেছে।সে আরো জানান,বিয়ের সময় আমার বাবা তার জামাতাকে ফুচকা ব্যবসার জন্য ২০ হাজার টাকা যৌতুক দিয়েছে।আমার বাবার মৃত্যুর পরে বাবার রেখে যাওয়া জমি বিক্রি করে ৫০ হাজার টাকা এনে দিয়েছি।আমার সবকিছু শেষ করে দিয়েছে।আমি এ ঘটনার বিচার চাই।
আহত আকলিমার স্বামী কামরুজ্জামান মোল্লা সন্তান নষ্ট করার চেষ্টার কথা অস্বীকার করে জানান,কথা কাটাকাটির এক পর্যায় ছেলে ওর মাকে কয়েকটি কিল ঘুষি মেরেছে মাত্র।আমতলী থানার ওসি (তদন্ত) মোঃ রেজাউল করিম বাদল বলেন,খবর পেয়ে রাতে হাসপাতালে পুলিশ পাঠিয়েছি।অভিযোগ পেলে আইনি ব্যবস্থা নেয়া হবে।
Leave a Reply